আমাদের বাংলাদেশে প্রতিটি গ্রামের বাড়িতে দেশি মুরগি দেখতে পাওয়া যায় যার সংখ্যা এমনিতে প্রতি বাড়ীতে ৫-১০টি হয়ে থাকে। এই ৫-১০টি মুরগী নিয়ে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে চিন্তা করা যাবে না। দেশি মুরগির পালন লাভজনক করতে হলে কিছু বিষয়ের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার, সেটি জাত নির্বাচনেই হোক বা রোগ পরিচর্যার ক্ষেত্রেই হোক।
প্রথমত দেশি মুরগির জাত নির্বাচন করে মুরগি চাষের চিন্তা মাথায় আনতে হবে।
দেশী মুরগী জাত বলতে আমরা যা বুঝি-
১-রোড আইল্যান্ড রেড (আরআইআর)
২-ব্ল্যাক অস্ট্রালর্প।
এবং অন্যান্য জাত যেমন
১-বনরাজা
২-গিরিরাজা
৩-গ্রামরপ্রিয়া ইত্যাদি জাত কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা হয়েছে
দ্বিতীয়ত মুরগির বাসস্থান যেখানে মুরগী রাখবেন এবং পালন করবেন।
দেশি মুরগির বাসস্থানঃ
প্রতিটি দেশি মুরগির জন্য গড়ে তিন বর্গফুট জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। এরপর মাটি থেকে সামান্য উপরে বাঁশ বা কাঠ দিয়ে কম খরচে বাসা তৈরি করতে হবে তৈরিকৃত ঘরগুলো যেন শুকনো ও পরিষ্কার হয়। মুরগি ঘরে যেন দিনের বেলায় পর্যাপ্ত আলো-বাতাসে ব্যবস্থা থাকে।
দেশি মুরগির খাবারঃ
দেশি মুরগি খাবার কুড়িয়ে খেতে পছন্দ করে তাই এদের খাবার বাসায় তৈরি করা যায় । যা সুষম খাবার হওয়া উচিত। এই খাবার আপনি নিজেই বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
সুষম খাবার তৈরি করতে তেমন বিশেষ কিছুই লাগে না, এই খাবার তৈরি করতে প্রতি ১ কেজি খাদ্যের উপাদানে যা যা লাগবে-
-চালের গুঁড়ো (৩০০ গ্রাম),
-খুদ বা গম ভাঙা (২৮০ গ্রাম),
-সর্ষে/ তিল খোল ( ২০০ গ্রাম),
-মাছ বা সোয়াবিন গুঁড়ো (২০০ গ্রাম),
- ভিটামিন ও খনিজ লবণ মিশ্রণ যেমন সাপ্লিভিট এম (২০ গ্রাম) মিশিয়ে এ খাবার তৈরি করতে পারেন।
যা মুরগির সংখ্যা অনুযায়ী মাথা পিছু ৫০-৭০ গ্রাম হিসাবে দিনে দুই বার অর্থাৎ
অর্ধেক সকালে ও অর্ধেক বিকালে খেতে দিতে হবে।
রাতের বেলা মুরগির ঘরে খাবার পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে।
দেশি মুরগির রোগ বালাইঃ
দেশি মুরগির অনেক ধরনের রোগ হয়ে থাকে তার মধ্যে প্রধানত -
-রানীক্ষেত
-ঠান্ডা জনিত রোগ বেশি দেখা যায়।
দেশি মুরগিতে সাধারণত রাণীক্ষেত রোগের লক্ষণ বেশি দেখতে পাওয়া যায়। এ রোগ হলে মুরগী খাওয়া বন্ধ করে দেয়।মাথা নিচু ও চোখ বন্ধ করে ঝিমাতে থাকে। সাদা চুনের মত পাতলা মল ত্যাগ করে।নাক দিয়ে সর্দি ও মুখ দিয়ে লালা ঝরে।
রাণীক্ষেত রোগের প্রতিরোধ ও চিকিৎসাঃ
রাণীক্ষেত রোগের এক মাত্র সমাধান হচ্ছে সময়মত মুরগীকে টীকা প্রদান করা। এ ছাড়া দ্বিতীয় ধাপে এ রোগের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে ডা. এর পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
আজকের লেখাটি ভালো লাগলে পেজটি লাইক বা ফলো করে পাশেই থাকবেন এবং যে কোন মুরগীর সমস্যা ও সমাধান নিয়ে বিস্তারিত জানতে কমেন্ট করতে পারেন।
বি. দ্র. সকল ওষুধ ভেটেরিনারি চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াবেন।
0 মন্তব্যসমূহ