বিউটিপার্লার গুলোতে যেতে অনেকের ইচ্চা থাকলেও যাওয়া সম্ভব হয় না টাকার অভাবে তাই আজকে আমরা শিখাবো কিভাবে আপনি বিনা খরচে এই শরীর ম্যাসাজ এর কাজটি করতে পারেন। বাড়িতে শরীর ম্যাসাজ করাটা যেমন ঝামেলার, তেমনি যত্ন করে কেউ আপনাকে ম্যাসাজ করে দেবে এধরণের লোক খুজে পাওয়াও কষ্টকর।
তাই সারা সপ্তাহের কাজের ক্লান্তি পা ব্যাথা,গা ব্যাথার দাওয়াই হলো ম্যাসাজ পার্লার যাওয়া। যেখানে বিউটিপার্লার গুলোতে শরীর চনমনে হলেও পকেটের স্বাস্থ কমে যায়। তাই চলুন আজকে জেনে নেয়া যাক ফ্রীতে কিভাবে বাসায় ম্যাসাজ করবেন।
ফ্রীতে করনীয় কিছু উপায়ঃ
চিন্তা নেই! কিভাবে পকেট রক্ষা করেও বডি ম্যাসাজ করা যায়? এই প্রশ্নের সঠিক সমাধান নিয়ে আজকের আলোচনা। এই সমন্ধে কিছু টিপস দেওয়া হবে কিভাবে আপনি নিজেই নিজের শরীর মালিশ করতে পারবেন। তবে মুল কথা হল, বডি ম্যাসাজ মানে এই নয় যে একগাদা ক্রিম বা তেল মালিশ করা। শরীরের প্রতিটি অংশে সঠিক পরিমাণে ক্রিম বা তেল ব্যবহার করার নামেই ম্যাসাজ।
সঠিক ম্যাসাজের পদ্ধতিঃ
যে বিষযটি এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, তা হলো শরীরের প্রতিটি অংশে একই রকম পদ্ধতিতে মালিশ করা যাবে না। দেহের প্রতিটি অংশে যাতে ভাল ভাবে রক্ত সঞ্চালিত হতে পারে, তার জন্য সঠিক পদ্ধতি মালিশের অনুসরণ করা উচিত। সঠিকভাবে মালিশ করলে শরীরে রক্তসঞ্চালনের উন্নতি ঘটে। সেই সঙ্গে ত্বকও বেশ সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। তাহলে দেখে নিন, কিভাবে বাড়িতেই বডি ম্যাসাজ করা যায় মাত্র কয়েকটি ধাপে।
ধাপ ১ঃ
বডি ম্যাসাজের সময় উপযুক্ত এবং ভালো মানের তেল বা ক্রিম বেছে নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে তরল উপাদান বিশিষ্ট ক্রিম ব্যবহার করা সবথেকে ভাল। আর যদি ইচ্ছা থাকে, তাহলে ভারী জাতীয় তেলও ব্যবহার করতে পারেন। যেমন, নারকেল তেল, সরষের তেল অথবা তিলের তেল ব্যবহার করতে পারেন। তবে তেলটা ব্যবহার করার আগে হালকা গরম করে নিলে সবচেয়ে ভাল হবে।
ধাপ ২
শরীর ম্যাসাজ করার সময় শরীরের সকল পোশাক খুলে নিবেন। তাই শরীর যখন ম্যাসাজ করবেন তখন আপনার স্বামী বা স্ত্রী একে অপরের সাহায্য নিতে পারেন বা একা একাই বডি ম্যাসাজ করতে পারেন।
ধাপ ৩
প্রথমে বডি ম্যাসাজ শুরু করা উচিত পা থেকে। প্রথমে পায়ের পাতা এবং পায়ের আঙ্গুলে মালিশ করতে হবে। এরপর পায়ের উপরের অংশে মালিশ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মালিশ করার সঠিক পদ্ধতি হল পায়ের উপরের অংশ থেকে পায়ের পাতা অবধি। ৫ মিনিট সময় ধরে প্রতিটি পায়ে মালিশ করতেই হবে।
ধাপ ৪
পায়ের মালিশ যথাযথ ভাবে হয়ে গেলে এরপর আমাদের নীচ সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশে হাঁটু। হাঁটুতে ব্যাথা হোক আর না হোক নিয়মিত মালিশ করা খুবই দরকার। কারণ শরীরের নীচের অংশের রক্তসঞ্ছালনের প্রধান অংশটি হল। হাঁটু মালিশ করতে হলে দুহাতে দিয়ে চক্রাকার পদ্ধতিতে মালিশ করতে হবে। মনে রাখতে হবে হাঁটুর ওপরের চামড়া খুবই নরম হয়। তাই কখনোই খুব জোরে মালিশ করা উচিৎ নয়।
ধাপ ৫
হাঁটুর ম্যাসাজ শেষে এবার এগিয়ে আসতে হবে ঊরুর দিকে। শরীরের এই অংশে ম্যাসেজিং এর জন্য সবথেকে বেশী তেল বা ক্রিম লাগে। কিন্তু মনে রাখবেন ম্যাসেজিং এর জন্য তেল যেন একটু গরম থাকে। চক্রাকার পদ্ধতিতে ঊরুর নীচের অংশ মালিশ করতে করতে উপরের দিকে উঠতে হবে। খেয়াল রাখবেন, ঊরুর উপরি অংশের পাশেই আমাদের সবথেকে বেশী স্পর্শকাতর অঙ্গ থাকে। সেখানে যেন কোনওভাবেই আঘাত না লাগে।
ধাপ ৬
ঊরুর ম্যাসাজ শেষে এবার মালিশ করতে হবে পেটে। যেখানে মানুষের শরীরে সবার আগে এবং সবথেকে বেশী মেদ জমা হয়। পেট মালিশ করতে যতটা প্রয়োজন ততটাই তেল নিতে হবে। কারণ কম তেল ব্যবহার করলে খুব সহজেই পেটে মেদ জমার সম্ভাবনা বেশি থাকে । পেটে মালিশ করার সময় চক্রাকার পদ্ধতিতে করতে হবে। বুকের মাঝখান থেকে তেল ধীরে ধীরে নিচের দিকে ঢেলে নিয়ে তারপর পেটে ভালো করে মালিশ করতে হবে। যতটা বেশি সম্ভব খানিকক্ষণ সময় নিয়েই পেটে মালিশ করতে হবে, যাতে পুরো পেটে ভালো করে তেল লাগানো যায়।
ধাপ ৭
পেট শেষে এবার মালিশ করতে হবে কাঁধ। সময় নিয়ে ধীরে ধীরে মালিশ করতে হবে কাঁধ। একা হলে এক হাতে তেল নিয়ে অন্যদিকের কাঁধে মালিশ করতে হবে। এক্ষেত্রে গলার মাঝখান থেকে কাঁধ অবধি চক্রাকার পদ্ধতিতে মালিশ করতে হবে। এরপর হাতে মালিশ করতে হবে। মনে রাখবেন, হাত থেকে কাঁধ এরপর হাতের তালু থেকে কাঁধ অবধি মালিশ করতে হবে। তবে খুব জোরে জোরে এবং লম্বা টান দিয়ে মালিশ করা যাবে না। তবেই ম্যাসাজ এর উপকার মিলবে।
ধাপ ৮
এবার সবশেষে হাতের তালুতে মালিশ করতে হবে। হাতের তালুতে কয়েক ফোঁটা তেল নিয়ে মালিশ শুরু করুন।
0 মন্তব্যসমূহ